বরগুনায় দিনেদুপুরে লোকজনের উপস্থিতিতে স্ত্রীর সামনে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাটিকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, ‘প্রকাশ্য রাস্তায় মানুষটাকে মারল। একজন ছাড়া কেউ এগিয়ে আসল না। বাংলাদেশের পরিস্থিতি তো এমন ছিল না।’
বৃহস্পতিবার এ ঘটনাটি আদালতের দৃষ্টিতে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস। এরপর বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই কথা বলেন।
আদালত বলেন, ‘দেশের পরিস্থিতি কোথায় গেছে! অনেকে দাঁড়িয়ে দেখল। ভিডিও করল, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসল না। কেউ প্রতিবাদ করল না। সমাজ কোথায় যাচ্ছে? আমারা সবাই মর্মাহত। পাঁচজন মানুষ অন্তত এগিয়ে আসলে হয়তো তারা সাহস পেত না। হয়তো তারা (দুর্বৃত্তরা) ক্ষমতাবান, হয়তো মানুষ ভয়ে এগিয়ে আসেনি।’
এদিকে এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার মধ্যে বরগুনার ডিসি ও এসপির কাছ থেকে এ বিষয়ে জেনে হাইকোর্টকে অবহিত করতে বলা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাসারকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দিনেদুপুরে মানুষজনের উপস্থিতিতে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শাহ নেয়াজ রিফাত শরীফকে (২৫) কোপায় সন্ত্রাসীরা। এই হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
নয়ন বন্ডের নেতৃত্বে ৪-৫ জন সন্ত্রাসী রিফাতকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায়। এ সময় বারবার সন্ত্রাসীদের হাত থেকে স্বামীকে বাঁচাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।
ভিডিওতে দেখা যায়, দুজন রামদা হাতে রিফাতকে একের পর এক আঘাত করে চলছেন। এসময় রিফাতের স্ত্রী হামলাকারীদের হাত থেকে স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও পারছিলেন না। রিফাতকে বাঁচানোর জন্য তার স্ত্রী চিৎকার করলেও আশপাশের কেউ এগিয়ে আসেনি। হামলাকারী যুবকরা রিফাতকে রক্তাক্ত করে সবার সামনে দিয়েই চলে যায়।